ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩২ তম প্রয়াণ দিবসে আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য | NARODNIK

 


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩২ তম প্রয়াণ দিবসে আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য


“বীর সিংহের সিংহ শিশু বিদ্যাসাগর বীর

উদ্বেলিত দয়ার সাগর বীর যে সুগম্ভীর

সাগরে যে অগ্নি থাকে কল্পনা সে নয় 

তোমায় দেখে অবিশ্বাসের হয়েছে প্রত্যয়”


ছেলেবেলা তাঁর কেটেছে গ্রামে। প্রাথমিক পাঠ গ্রামের সংস্কৃত টোল থেকেই। যদিও উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজনে এবং তাঁর বাবার কাজের জন্য গন্তব্য হল শহরতলী কলকাতা। এতদিনের বীর সিংহ গ্রাম ছেড়ে এলেন বাবার হাত ধরে। গ্রাম থেকে কলকাতা পায়ে হেঁটে পাড় করা কথার কথা ছিল না। তবুও পড়াশোনা যে শিখতেই হবে। তাই দীর্ঘপথ অতিক্রম হাসি মুখেই। সে পথেই শেখা হল ইংরেজি অক্ষর। তাও আবার রাস্তার মাইলস্টোন লক্ষ্য করে, যাচাই করে।

কে এই বালক? ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদ্যাসাগর উপাধি পেয়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

যাঁর সঙ্গে আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ বর্ণপরিচয়ে। তাঁর জীবনের নানান ঘটনা আমরা নিশ্চয়ই চর্চা করি। কিন্তু এখন যে সময়ে আমরা ফিরে যাব, সে সময়ে তাঁর বয়স হয়েছে ভালোই। শরীরটাও ভালো যাচ্ছে না। তাঁকে এক ব্যক্তি বলেন― কিছুদিনের জন্য কার্মাটারে কাটিয়ে আসতে, ভালো কিছু খাবার খেতে, নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে। 

কার্মাটার সাঁওতাল পরগনা।

সেই ব্যক্তির উপদেশ শুনে বিদ্যাসাগর বলেন―

আমি সেখানে গিয়ে ভালোই থাকি বটে। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি ভালো খাবো আর সেই সাঁওতালরা না খেয়ে দিন কাটাবে, খালি পেটে দিন কাটাবে, আমি তা সহ্য করতে পারবো না।

হ্যাঁ, মহৎ এই মানুষটির মন কাঁদতো গরীব মানুষের কষ্ট দেখে। তৎকালীন সময়ের অনাচার, কুআচার, বিধবা বিবাহের জন্য সারাটা জীবন আপোষহীন সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর জীবনের এই মহতী সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন,

‘‘দয়া নহে, বিদ্যা নহে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের চরিত্রের প্রধান গৌরব তাহার অজেয় পৌরুষ, তাঁহার অক্ষয় মনুষ্যত্ব,।’’

এই মহান মনীষী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ১৩২ তম প্রয়াণ দিবসে আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য।

Post a Comment

0 Comments