বিশ্বাস | NARODNIK

 



বিশ্বাস

শুভ মন্ডল 

১৮৯৫.০৭.০৮ – আমার  জন্ম । আমার  পরিবারে মানে মা বাবা আমি আর ছোট বোন আর যার কথা না বললেই হয় না , সে হল আমাদের প্রিয়  রামচরন  দাদা।

সালটা ছিল ১৯২৫ তখন আমার বয়স ছিলো ৩০ বছর হবে চাকরি পেয়েছি , সব কিছু বেশ ভালোই চলছিল কলকাতাতে একটা বাড়িও নিয়েছি, একটা গাড়িও নিয়েছি  এই ভাবে পরিবারের সকল সদস্যের সাথে  ভালোই ছিলাম। হঠাৎ অফিসে যাবার সময় অনেক ছোটবেলার এক বন্ধুর সাথে দেখা , আমার বন্ধু এখন একটা ব্যাঙ্কে কাজ করে অনেক কথা হয় আমাদের। কথা বলতে বলতে আমার বন্ধু  আমাকে বলে ,তুই তো এখন ভালোই বেতন পাচ্ছিস , তাও ঠিক কত?

আমি বললাম পি.এফ কেটে পাই ২৫০০০।

আমার  তাতে হয়ে যায়  এখনও বিয়ে করি নি তো আমার  হয়ে যায় ।

তখনই  আমার  বন্ধু  আমাকে বলে যে,

আমি তো ব্যাঙ্কে আছি তো ,তুই আমার  কাছে  কিছু টাকা  রাখতে পারিস , নামি দামি ব্যাঙ্ক  ভয় নেই তোর টাকা মেরে দিবে  না  এই টুকু বিশ্বাস  রাখতে পারিস।  আমি বললাম এতে বিশ্বাস হবে না কেন তুই আমার ছোটবেলার বন্ধু।আমার বন্ধু  বলে  ঠিক আছে বেশ , তাহলে আগামীকাল যাই তোর বাড়ি ?আমি বললাম ঠিক আছে  বাকি কথা বাড়িতেই হবে । পরের দিন ঠিক সকাল ১১.০০ টা নাগাদ আমার বন্ধু আমার বাড়ি আসে। তারপর  যা যা কাজ ছিল সব কিছু শেষ হল। কিন্তু  আমার মনে তো একটা  ভয় ছিলোই ।আমি বার বার বললাম ভাই একটু দেখিস আমি কিন্তু  গরিব মানুষ । আমার বন্ধু  বলে ভয় নেই কোনো আর তোর ফোনে তো ম্যাসেজ আসবেই চিন্তার কিছু নেই।  এই শুনে আমি একটু  স্বস্তি পেলাম। বন্ধু চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে ,তাহলে টাকা টা কি আজ কেই দিবি ?নাকি আগামী  কাল ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা করবি?

আমি বললাম আগামী কাল আমার একটা মিটিং আছে তো যেতে পারব না, তুই আজ কেই নিয়ে যা, কিন্তু  কত টাকা দিতে হবে? আমার বন্ধু বলে,এখন ৫০০০০  দিলেই হবে , আমার কাছে  ছিলো  ৪০০০০ আমি তাই দিয়ে দিলাম। পরের দিন সকালে আমি আমার অফিসের মিটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, তো বন্ধু কে ফোন করা হয়নি। বাড়ি ফেরার পথে  আমি  আমার বন্ধু কে ফোন করি ,প্রথমে ফোনটা বেজে গেলো, আমি ক্লান্ত ছিলাম তাই বিছানায় গা টা একটু এলিয়ে নিতে গিয়ে কখন যে চোখ লেগে জানি না। উঠে দেখি ঘড়ি তে তখন রাত  ১১.০৫ আমি আবার আমার বন্ধু কে ফোন করা শুরু করি কিন্তু সে কোনো  উত্তর দিল না,,রাত কেটে গেল পূর্ব দিকটা লাল হয়ে উঠেছে। আমার বন্ধু আর ফোন রিসিভ করে নি।  আমি পরের দিন  থানায় ব্যাপারটা জানাই, পুলিশ সুপার বলেন আমাদের একটু সময়  দিন,আমি আমার বাড়ি চলে আসি, ফিরে এসে জানালার পাশে  দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, আমার কাছে র রামচরন দাদা   জানতে চায় কি হয়েছে।

আমি রামচরন দাদা কে বললাম একটু চা খাওয়াবে? বলল হ্যাঁ  দিচ্ছি । 

চা দিতে দিতে  সে আবার আমাকে  প্রশ্ন করে ,,পরে আমি তাকে সব জানাই। রামচরন দাদা আমাকে বলে এটা ১৯২৫  এখন কেউ কে বিশ্বাস করতে নেই। আমি বললাম,  তাহলে তো তোমাকেও বিশ্বাস করা যাবে না ।আমি কথা টা ও ভাবে বলতে চাই নি , শুধু নিজের  লোক ছাড়া  কেউ কে বিশ্বাস করতে নেই।

ঠিক বলেছ রামচরন দাদা ।

মা বাবা ভাই বোন ছাড়া  কেউ নিজের হয়  না।

এই  জন্য কোন অচেনা অজানা লোক কে বিশ্বাস করবেন না , সে যত ভালো বন্ধুই হোক না কেন।

 তো সবার কাছে একটা অনুরোধ যে আপনার আমার গল্প টা পড়বেন আর একটু সচেতন হবেন ।

Post a Comment

0 Comments