স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কি সত্যি মানুষের প্রয়োজনে | NARODNIK



স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশিকা কেন 

স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কি সত্যি মানুষের প্রয়োজনে

সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে গেলে এবার থেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড বাধ্যতামূলক। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে অন্য সরকারি স্বাস্থ্য পকল্প সংক্রান্ত কার্ড বাধ্যতামূলক, মঙ্গলবার এই নির্দেশিকা জারি করল পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর।  নির্দেশিকায় বলা হয়েছে-

১) সরকারি হাসপাতাল গুলোতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহারে পদ্ধতি হিসেবে একরকম নির্দেশিকা।

২) বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহারের পদ্ধতি হিসেবে দ্বিতীয় নির্দেশিকা।

সরকারি হাসপাতাল গুলোতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহারের জন্য যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর দফতরের পক্ষ থেকে তাতে বলা হয়েছে - সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে গেলে, হাসপাতালে ভর্তি করার পূর্বে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড জমা করা বাধ্যতামূলক। 

স্বাস্থ্য সাথী কার্ড যদি  না থাকে?

স্বাস্থ্য সাথী কার্ড যদি কারো কাছে না থাকে তাহলে, রাজ্য সরকার যে হেলথ স্কিম রয়েছে অথবা HI Card অথবা সেন্ট্রাল গভমেন্ট হেলথ স্কিম অর্থাৎ, সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের- রাজ্য সরকারের যে হেলথ স্কিম রয়েছে অথবা HI Card অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য প্রকল্প সংক্রান্ত কার্ড জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড যদি কারো কাছে না থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালেই নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে, সেখান থেকেই নতুন কার্ড ইস্যু করে দেওয়া হবে। তেমনটাই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এর পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য সরকার তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে বেসরকারি  হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ১৯০০ টি প্যাকেজ উল্লেখ করেছে রাজ্য সরকার। এই ১৯০০ টি প্যাকেজের বাইরে কোনো রোগীর চিকিৎসা করা যাবে না। এই প্যাকেজের মধ্যেই চিকিৎসা করতে হবে এবং প্যাকেজ বহির্ভূত কোন অর্থ নেওয়া যাবে না। যারা বেসরকারি  হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে চিকিৎসাধীন থাকবেন তাদের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রাইব করা যাবে না। সরকারি হাসপাতালের যে PP Model এর ডায়গনস্টিক সেন্টারে যে রেট চার্ড, সেই রেট চার্ড অনুযায়ী পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। 

এই দুটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।


এখন প্রশ্ন হলো:-

১) সরকারি হাসপাতাল তো সরকারি। সব বিনামূল্যে চিকিৎসার জায়গা। তা হলে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশিকা কেন?

২) যারা ভিন্ন ভিন্ন জেলায় কাজ করে অর্থাৎ যারা পরিযায়ী শ্রমিক । আমাদের রাজ্যও ভিন রাজ্যের লোক আসেন, হঠাৎ যদি অসুস্থ হয় তাদের কি হবে? যদি কোনো  শ্রমিক সরকারি স্বাস্থ্য পকল্প সংক্রান্ত কার্ড নিয়ে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যান তখন কি তার পরিবার সরকারি চিকিৎসা পাবে না?

৩) অনেক পরিবার আছে বাড়ির মহিলা (মা/স্ত্রী) নেই, গত হয়েছেন। সেই পরিবারে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হবে না। কারণ, মহিলা ছাড়া পুরুষের নামে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ইস্যু হয় না। তাহলে সেই সব পরিবার কি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে?

৪) স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা ভর্তুকি ধার্য করা হয়েছে। ধরে নেওয়া যাক, কোনো পরিবারের একজন সদস্য সাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, রোগীর প্রয়োজনে ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে যায়, তাহলে রোগীর পরিবারের অন্য সদস্যদের সরকারি হাসপাতাল থেকে টাকা দিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে?

৫) কোনো রোগী নার্সিংহোমে রোগী ভর্তি হলে শুধু অপারেশনই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহার হয়। বাকি সমস্ত বিল রোগী কে জমা করতে হয়।

স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কি সত্যি মানুষের প্রয়োজনে?

Post a Comment

0 Comments